দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে চলমান কর্মসূচিতে এই ঘোষণা দেন তিনি।
ড. রইস উদ্দিন বলেন, “আমাদের আগের তিন দফা দাবির সঙ্গে নতুন করে আরেকটি দাবি যুক্ত করেছি—শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার চাই। যতদিন এসব দাবি মানা না হবে, ততদিন ক্যাম্পাসে ফেরা নয়। অর্থাৎ জবি শাটডাউন থাকবে।”
এর আগে বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে শতাধিক শিক্ষার্থী। পথে একের পর এক পুলিশি ব্যারিকেড পেরিয়ে তারা কাকরাইল মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার একপর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৮ জন আহত হন।
ঘটনার পর রাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে যান তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সেখানে বক্তব্য দেয়ার সময় তার দিকে বোতল ছুড়ে মারেন এক ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী। এরপরও তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্রুত বৈঠক হবে। যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
তবে এই আশ্বাসে আন্দোলন থামায়নি জবি শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। গভীর রাতেও কাকরাইল মোড়ে সড়কে বসে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। অনেকেই সড়কে ঘুমিয়েছেন, কেউ কেউ স্লোগান দিয়েছেন মধ্যরাত পর্যন্ত।
জানা গেছে, সোমবার শিক্ষার্থীদের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ হয়। এরপর আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও শিক্ষক সমিতির সদস্যরা ইউজিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন সংকট নিয়ে আলোচনা হলেও দাবি মানা হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবি, বারবার সমস্যার কথা বললেও ইউজিসি দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। তাই শেষমেশ ‘লং মার্চ টু যমুনা’র মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জবির ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।
২. জবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করেই অনুমোদন করতে হবে।
৩. জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
নতুন যুক্ত হওয়া দাবিটি হলো—
৪. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলার যথাযথ বিচার ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।